মুক্তিযোদ্ধা রনজিৎ রায়ের সম্পত্তি দখলে নিতে জমিতে ঢোকার প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান
অভি মজুমদারঃ মুক্তিযোদ্ধা রনজিৎ রায়ের পৈত্রিক সম্পত্তি দখলে নিতে জমিতে ঢোকার প্রবেশপথ বন্ধ করে বেড়া দিয়েছে বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান ভূঁইয়া….
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে মুক্তিযোদ্ধা রনজিৎ রায়ের বাড়ির জমিতে ঢোকার প্রবেশপথ বন্ধ করে বেড়া দিয়েছে স্থানীয় বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান ভূঁইয়া। এর আগেও মুক্তিযোদ্ধা রনজিৎ রায় এবং উনার কাকাতো ভাই নিত্যানন্দ রায়ের জমিতে ধর্মীয় স্থাপনা এবং দেয়াল নির্মাণ করেছে ওই বিএনপি নেতা।
এর আগেও রনজিৎ রায়ের কাকাতো ভাই নিত্যানন্দ রায়ের বসতবাড়ি গাছাপালাসহ সাবাড় করেছিল ভূমিদস্যু ওই বিএনপি নেতা। পূর্ববর্তী ঘটনায় মামলা চলমান থাকা স্বত্ত্বেও এবার সম্পূর্ণ গায়ের জোরে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে জমিতে ঢুকার প্রবেশপথ বেড়া দিয়ে আটকানো হলো।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণে জানা যায়, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বারইকান্দি গ্রামের বাসীন্দা মুক্তিযোদ্ধা রনজিৎ রায় এবং উনার কাকাতো ভাই নিত্যানন্দ রায়ের জমি দখলে নিতে দীর্ঘদিন ধরেই অপচেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয় বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান ভূঁইয়া। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান বিবাদ গড়ায় থানা-পুলিশ আদালত পর্যন্ত।
থানা-পুলিশের হস্তক্ষেপে মুজিব কিছুদিন চুপ ছিলো। তবে দেশে করোনা মহামারীর এই ক্রান্তিলগ্নে ভূমিদস্যু মজিবুর নতুন করে জমি দখলের পায়তারা শুরু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযোদ্ধার জমির প্রবেশপথে আজ টিনের বেড়া দিয়ে পুরোপুরি আটকে দিয়েছে মজিবুর। আজ সকালে বেড়া দেওয়ার বিষয়টি দেখতে পান ভুক্তভোগী ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।
পরে এ বিষয়ে স্থানীয়দের জানালে তারা মুজিবুরকে বেড়া না দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু কারও কথা না শুনে দলবল নিয়ে গায়ের জোরে বেড়া দিয়ে পথ আটকে দেয় মজিবুর।
এ বিষয়ে মুক্তযোদ্ধা পরিবারের পক্ষ থেকে স্খানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যান ও দাউদকান্দি থানার ওসিকে জানানো হলেও, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা রনজিৎ রায় জানিয়েছেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী তথা ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে সারা দেশে বৃক্ষরোপণের নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেই নির্দেশনা মেনেই আমার ও কাকাতো ভাইয়ের বসতবাড়ির অব্যবহৃত জমিতে বৃক্ষরোপনের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। স্থানীয় একজনকে দিয়ে গতকাল জমিতে গর্ত করে আজ সকালে সেই গর্তে আরও কিছু কাজ করা হয়েছিল। কিন্তু পরে জানতে পারি, মুজিব আমার বাড়ির প্রবেশপথ বন্ধ করে বেড়া নির্মান করেছে। মূলত আমার ও কাকাতো ভাইয়ে অবশিষ্ট জমি দখলের জন্যই দীর্ধদিন ধরে সে আমাদের পরিবারের উপর নানারকম অত্যাচার করে আসছে।”
প্রসঙ্গত, গত বছরের জুন মাসে রনজিৎ রায়ের কাকাতো ভাই নিত্যানন্দ রায়ের বসতঘর ও রান্নাঘরসহ সকল স্থাপনা গায়েব করে দেয় বিএনপি নেতা মজিবুর। রাতের আঁধারে ঘর-ভিটা গায়েবের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর জামিনে আবারো এলাকায় ফেরত আসে মজিবুর। এরপর থেকেই আবারো নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটির জমি দখলের পায়তারা শুরু করেছে সে।
এ হীন উদ্দেশ্যে পূর্বেই রণজিৎ রায়কে বাড়িছাড়া করে মজিবুর ও তার অনুসারীরা। নিজের জায়গা-জমি থাকার পরেও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি ভয়ে একই এলাকায় অন্যত্র বাসা ভাড়া থাকেন। এছাড়া নিত্যানন্দের জমিতে বসবাসকারী তার আপন ছোটভাই স্বপন রায়কেও ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়িছাড়া করেছে মজিবুর। তাদের জমির কিছু অংশ দখল করে ধর্মীয় স্থাপনা ও দেয়াল নির্মাণ করেছে মুজিবুর।
একজন দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধার প্রতি এধরণের ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করছি।
সেইসাথে মুক্তিযোদ্ধা রণজিৎ রায়ের জমি উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসন সহ মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয়ের জরুরী দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সাংবাদিক মিডিয়া সহ সচেতন সকল নাগরিকের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, আপনারা প্লিজ এই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পাশে দাঁড়ান। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় একজন বিএনপি নেতার এইধরনের আইনবিরোধী কার্যকলাপ কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না।