জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ, আতঙ্কে পাকিস্তান ছাড়ছেন হিন্দুরা

আরোকের পরিবারের অবশ্য দাবি, এটা জোর করে অপহরণ ও ধর্মান্তরিত করার ঘটনা। সংখ্যালঘুদের অপহরণ এবং ধর্মান্তরিত করে বিয়ের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে, এই অভিযোগ তুলে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং পাক সেনাপ্রধানের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

পাকিস্তানে ফের এক হিন্দু তরুণীকে জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ তুলল তাঁর পরিবার। বেশ ক’দিন ধরে নিখোঁজ মেয়েটির যে ভিডিয়ো সামনে এসেছে, তাতে অবশ্য তরুণীর দাবি, স্বেচ্ছায় মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে আলি রাজা নামে এক যুবককে বিয়ে করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তাঁর হিন্দু পরিবার অশান্তি করতে পারে, এই আশঙ্কায় জেলা আদালতে মামলাও দায়ের করেছেন। তরুণীর পরিবার অবশ্য অপহরণ করে ধর্মান্তরিত করা এবং জোর করে বিয়ের অভিযোগ তুলে ইমরান খানের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন।

আরোক কুমারি নামে ওই হিন্দু তরুণী সিন্ধ প্রদেশের জাকোবাবাদের বাসিন্দা। গত বুধবার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। পরে একটি ভিডিয়োয় মুসলিম এক যুবকের পাশে বসে থাকতে দেখা যায় আরোককে। ভিডিয়োয় আরোকের দাবি, ‘আমি স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। আমার মুসলিম নাম আলিজা। দরগা আম্রোত শরিফে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আলি রাজাকে বিয়ে করি আমি। আমার বয়স ১৮ বছর। আমার হিন্দু পরিবারের থেকে নিরাপত্তা চেয়ে আমি এবং আমার স্বামী রাজা সুকের আদালতে একটি মামলা করেছি।’

আরোকের পরিবারের অবশ্য দাবি, এটা জোর করে অপহরণ ও ধর্মান্তরিত করার ঘটনা। সংখ্যালঘুদের অপহরণ এবং ধর্মান্তরিত করে বিয়ের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে, এই অভিযোগ তুলে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং পাক সেনাপ্রধানের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। হিন্দু সম্প্রদায়ের এক প্রতিনিধির কথায়, ‘নানকি কুমারি ওরফে আরোক কুমারির বয়স মাত্র ১৫ বছর। তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, আর তা নিয়ে জাকোবাবাদের সব মানুষ উদ্বিগ্ন। প্রতিদিনই কোনও না কোনও সংখ্যালঘু মেয়েকে অপহরণ ও ধর্মান্তরিত করার খবর মিলছে। সংখ্যাগুরুরা এ ভাবেই আমাদের কোণঠাসা করতে চাইছে। আমাদের এখানে বাস করাই মুশকিল হয়ে উঠছে। গত কয়েক দিন প্রায় ৫০টি মেয়ের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে।’ আরোকের পরিবারের দাবি, তাঁরা এই অপহরণ এবং ধর্মান্তরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিলে নামবেন। পাকিস্তানের নানা অংশে সেই প্রতিবাদ ছড়িয়ে দেবেন।

সাম্প্রতিককালে পাকিস্তানে বেশ কিছু হিন্দু ও শিখ তরুণীর অপহরণ ও ধর্মান্তরের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ভারতীয় রাজনীতিকরা একাধিকবার পাক প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রীদের দাবি, এই অত্যাচার থেকে বাঁচাতেই অমুসলিম শরণার্থীদের জন্য সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এনেছে ভারত।

সূত্রঃ এই সময়