একমাত্র সনাতন ধর্মই দিয়েছে নারীকে সর্বোচ্চ সম্মান ও অধিকার
সনাতন ধর্মে নারী যতটা স্বাধীনতা ও মর্যাদা পায় তা বিশ্বের আর কোন ধর্ম ও সমাজে পায় না। সনাতনী নারী-পুরুষকে একসাথে পূজা করতে অনুমতি দেয়া হয়েছে এছাড়াও উল্লেখ আছে স্ত্রী ছাড়া স্বামীর কোন পূজা-যজ্ঞ সম্পন্ন হতে পারে না, তাই স্ত্রীকে সহধর্মিনী ও অর্ধাঙ্গিনী বলা হয়।
মন্দিরে নারী দেবী পূজিত হন এবং নারী পৌরহিত্য করতে পারেন। নারীর নেতৃত্ব সনাতন ধর্ম ও সমাজে স্বীকৃত। বিশ্বের অন্য কোন ধর্মের গ্রন্থ রচনাতে নারীর কোন অবদান স্বীকার করাই হয়নি। সনাতনী বিবাহ বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট বিবাহ। সনাতনী বিবাহ হল একটা ব্রত, অবিচ্ছেদ্য, আজীবন সুখে-দু:খে একসাথে থাকার সংকল্প।
দেখে নেই পবিত্র বেদ অনুযায়ী সনাতন ধর্ম নারীকে কতটুকু অধিকার দিয়েছে।
১/ পিতার সম্পত্তিতে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার রয়েছে। ঋগবেদ ৩/৩১/১
২/ গর্ভের সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক সে যেনো ভালো থাকে। অথর্ব বেদ ২/৩/২৩
৩/ একজন নারীর কখনো যেনো কোনো সতীন না থাকে। অথর্ব বেদ ৩/১৮/২
৪/ নারী হল মঙ্গলময়ী লক্ষী। অথর্ব বেদ ৭/১/৬৪
৫/ নারী হল জ্ঞানের ধারক। অথর্ব বেদ ৭/৪৭/১
৬/ নারী হল শিশুর প্রথম জ্ঞানদাতা। অথর্ব বেদ৭/৪৭/২
৭/ নারী শিক্ষা গ্রহণ শেষে পতিগৃহে যাবে। অথর্ববেদ ১১/৫/১৮
৮/ নারীর যেনো দুঃখ কষ্ট না হয়। অথর্ব বেদ১২/২/৩১
৯/ নারীকে উপহার হিসাবে জ্ঞান উপহারদাও। অথর্ববেদ ১৪/১/৬
১০/ যেসকল নারী দেহ রুপ দেখিয়ে অপরের সাথে বন্ধুত করতে চায়, তারা হায়েনাদের মত এবং তাদের জন্য নরকভোগ অনিবার্য, তাদের পরিত্যাগ কর। ঋগবেদ ১০/৯৫/১৫
১১/ সনাতন ধর্মে বিধবা বিবাহ সমর্থন করে পরাশর সংহিতায় বলা হয়েছে—
নষ্ট মৃতে প্রব্রজিতে ক্লীবে চ পতিতে পতৌ।
পচস্বাপতসু নারীরাং পতিরন্যো বিধোযতে।।”
(পরাশর স্মৃতি সংহিতা ৪/২৭)
অনুবাদঃ— নারীর যদি স্বামী মারা যায়, তাঁর স্বামী যদি গোপনে সন্ন্যাস গ্রহণ করে নিখোঁজ হয়ে যায়, স্বামী যদি নিখোঁজ হয়ে যায়, স্বামী যদি সন্তান উৎপাদনে অক্ষম হয়, স্বামী যদি অধার্মিক ও অত্যাচারী হয় তবে নারী এই স্বামী ছেড়ে পুনরায় বিবাহ করতে পারে।
১২/ পবিত্র বেদ এই সম্পর্কে কি বলে দেখা যাকঃ
ইয়ং নারী পতি লোকং বৃণানা নিপদ্যত উপত্ব্য মর্ন্ত্য প্রেতম্। ধর্মং পুরাণমনু পালয়ন্তী তস্ম্যৈ প্রজাং দ্রবিণং চেহ ধেহি।। (ঋগ্বেদ ১০.১৮.৭-৮)
অর্থাৎ— হে মনুষ্য! এই স্ত্রী পুনর্বিবাহের আকাঙ্খা করিয়া মৃত পতির পরে তোমার নিকট আসিয়াছে। সে সনাতন ধর্মকে পালন করিয়া যাতে সন্তানাদি এবং সুখভোগ করতে পারে।
১৩/ স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবাদের পুনরায় বিবাহ করার অনুমতি দিয়ে তৈত্তিরীয় আরন্যক এ বলা হয়েছে (৬.১.১৪ )
“হে নারী! তুমি এই মৃতপতির মায়ায় আবদ্ধ হয়ে আছো।এই মায়াত্যগ কর। পুনরায় পতি কামনা করো এবং পাণিগ্রহনকারী (নতুন পতি) বিবাহের অভিশাষী এই পতিকে জায়াত্বের সহিত প্রাপ্ত হও”
অর্থাত্ এখানে স্বামীমৃত্যুর পর স্ত্রীকে শোকে মুহ্যমান না হতে,শোকত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবন শুরু করতে বলা হয়েছে এবং প্রয়োজনে পুনরায় বিবাহ করার অনুমতি দিয়েছে।
Credit: Thenewse & Facebook